ক্রিকেটের বল যদি রঙ হয়। আর ব্যাট যদি হয় তুলি। তাহলে সেই রঙ-তুলির ‘ক্যানভাসের’ নাম স্টেডিয়াম তথা মাঠ। ১ লাখ ৬০ হাজার স্কয়ার ফিটের সবুজ গালিচায় কতো শত স্বপ্ন উঁকি দিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ায় মহীরুহের ন্যায়। আবার কতো শত স্বপ্নের হয় সলিল সমাধি। কতো বাক বদল আর চিত্রনাট্যের মঞ্চ হয়ে এই মাঠ।
ক্রিকেটের
নানা অলি-গলির রেকর্ডগুলোর সঙ্গে রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নেয় মাঠগুলোও। গ্যালারিগুলোতে উচ্ছ্বাস আর কান্নার স্মৃতির
পট জমা রয়। আরও কিছু স্মৃতি, আরও কিছু উচ্ছ্বাস, আরও কিছু অপ্রত্যাপ্তির চাপাকান্নার সাক্ষী হতে যাচ্ছে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ভেন্যুগুলো। চলুন এবার সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
নরেন্দ্র
মোদী স্টেডিয়াম (আহমেদাবাদ):
গুজরাটে
অবস্থিত স্টেডিয়ামটি ১৯৮২ সালে নির্মিত হয়। ২০০৬ সালে পুনঃনির্মাণ করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে পুরো স্টেডিয়ামটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। মোতেরা কিংবা সরদার প্যাটেল নাম পাল্টে নতুন নাম দেওয়া হয় নরেন্দ্র মোদী
স্টেডিয়াম। ১ লাখ ৩২
হাজার ধারণক্ষমতার ৫০ একরের দৃষ্টিনন্দন
স্টেডিয়ামটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। এখানেই ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ
অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ভারত-পাকিস্তান, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচও হবে এখানে।
শুরুতে
স্টেডিয়ামটির উইকেট স্লো ছিল। বোলাররা দারুণ সুবিধা পেতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বদলে গেছে। এই মাঠে ওয়ানডেতে
প্রথম ইনিংসে গড় রান ২৩৫।
দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২০৩।
এখানে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৬
বার। আর আগে বোলিং
করা দল জিতেছে ১২
বার। সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৬৫।
আর সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ ৮৫/১০।
এই
মাঠে অনুষ্ঠিত সবশেষ ২২ ওয়ানডেতে বোলাররা
৩০.৫৪ গড়ে, ৩৫.৮৯ স্ট্রাইক রেটে
৭০ উইকেট নিয়েছেন।
রাজীব
গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম (হায়দরাবাদ):
২০০৪
সালে এই স্টেডিয়ামটি ১৬
একর জমির ওপর নির্মিত হয়। যার ধারণক্ষমতা ৫৫ হাজার। হাই
স্কোরিং ভেন্যু হিসেবে এটা বেশ পরিচিত। ২০০৫ সালে এখানে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে ভারত এখানে মোটে ৫টি ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে ৩টিতেই হেরেছে তারা।
এই
স্টেডিয়ামের উইকেট ফ্লাট হলেও সময়ের সাথে সাথে স্লো হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে স্পিনাররা বেশ সুবিধা পায়। এই মাঠে মোট
৭টি ওয়ানডে ম্যাচে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ৪
বার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ৩
বার।
প্রথম
ইনিংসে গড় রান ২৮৮।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২৬২।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৫০।
সর্বনিম্ন রান ১৭৪/১০। এই মাঠে দক্ষিণ
আফ্রিকা সর্বোচ্চ ২৫২ রান তাড়া করে জিতেছিল। আর অস্ট্রেলিয়া ২৯০
রান ডিফেন্ড করে জিতেছিল।
রাজীব
গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচসহ মোট ৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম
হিমাচল
প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম (ধর্মশালা):
সমুদ্রপৃষ্ঠ
থেকে ১ হাজার ৪৫৭
মিটার উপরে অবস্থিত ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামটি বিশ্বের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম। যার পেছনেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে হিমালয়ের ধৌলাধর পর্বতশ্রেণির পশ্চিম প্রান্ত। মনোরম তুষারাবৃত পর্বতশৃঙ্গ যে কাউকে আকৃষ্ট
করবে।
২৩
হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি ২০০৩
সালে নির্মিত হলেও ২০১৩ সালের আগে এখানে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে অল্প সময়েই এই স্টেডিয়ামটি বিশ্বমানের
হয়ে উঠেছে।
এই
মাঠটিও হাই স্কোরিং ম্যাচের সাক্ষ্য দিচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বেশ উপরে হওয়ায় বল এখানে বেশ
গতিপ্রাপ্ত হয়। তবে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে সন্ধ্যার পর থেকে ‘ডিউ’
ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণে এখানে
খেলা দলগুলো পরে ব্যাট করতে চায়। এই মাঠে এ
পর্যন্ত মোট ৪টি ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে। আগে ব্যাট করা দল জিতেছে মাত্র
একবার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ৩
বার।
প্রথম
ইনিংসে গড় রান ২১৪।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০১। এখানে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৩০।
আর সর্বনিম্ন ১১২/১০। সর্বোচ্চ ২২৭ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড রয়েছে এখানে।
এবারের
বিশ্বকাপে মোট পাঁচটি ম্যাচ হবে এখানে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে এই ভেন্যু থেকে
আফগানিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে।
অরুণ
জেটলি স্টেডিয়াম (দিল্লি):
ভারতের
সবচেয়ে পুরনো দুটি স্টেডিয়ামের অরুণ জেটলি। ১৮৮৩ সালে নির্মিত সাবেক ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ৪৮ হাজার। সময়ের
পরিক্রমায় বহুবার স্টেডিয়ামটির উইকেট ও অবকাঠামো পুনঃনির্মাণের
মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ১৯৪৮ সালে এখানে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
স্টেডিয়ামটি
ব্যাটিংবান্ধব। তবে এই স্টেডিয়ামেই অনীল
কুম্বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৯৯ সালে ১০ উইকেট শিকার
করেছিলেন। ১৯৮৩ সালে এই মাঠেই সেঞ্চুরি
করে সুনীল গাভাস্কার স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ২৯
সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন।
এই মাঠে মোট ২৮টি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৩ বার। আর পরে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪ বার। প্রথম ইনিংসে গড় রান ২২৩। আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২০৩। সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩৩০। আর সর্বনিম্ন ৯৯/১০।
এবারের
বিশ্বকাপের মোট পাঁচটি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের একটি ম্যাচ রয়েছে এখানে।
এমএ
চিদাম্বরম স্টেডিয়াম (চেন্নাই):
এবারের
বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকায় আছে তামিলনাড়ুর এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়াম। মাদ্রাজ ক্রিকেট ক্লাব মাঠ নামে পরিচিত স্টেডিয়ামটি ১৯১৬ সালে নির্মিত হয়। সে হিসেবে এটা
ভারতের অন্যতম সবচেয়ে পুরনো স্টেডিয়াম। স্থানীয়ভাবে এটি ‘চেপুক’ নামেও পরিচিত। ১৯৩৪ সালে এই মাঠে প্রথম
আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে পুনঃনির্মিত হওয়া স্টেডিয়ামটিতে দর্শক ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার।
প্রথমদিকে
যখন এই মাঠে খেলা
হতো তখন পেসবান্ধব উইকেট ছিল। পরবর্তীতে এটি স্পিনবান্ধব হয়। এই মাঠের সর্বোচ্চ
উইকেট শিকারি ১০ জনের মধ্যে
৯ জনই স্পিনার। এ পর্যন্ত এই
মাঠে মোট ৩৪টি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৭
বার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ১৬
বার।
প্রথম
ইনিংসের গড় রান ২২৪।
আর দ্বিতীয় ইনিংসের গড় রান ২০৫।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৩৭।
সর্বনিম্ন ৬৯/১০।
এবারের
বিশ্বকাপের মোট পাঁচটি ম্যাচ রয়েছে এই ভেন্যুতে। অস্ট্রেলিয়া-ভারত, পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি এখানে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশেরও একটি ম্যাচ রয়েছে।
ইকানা
ক্রিকেট স্টেডিয়াম (লখনৌ):
ভারতরত্ম
শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ইকানা স্টেডিয়ামটিতে ২০১৭ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এটি ভারতের সবচেয়ে বড় সোজা বাউন্ডারির
মাঠ। এই মাঠে বিশ্বকাপের
পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে ভারত-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ
আফ্রিকার ম্যাচ উল্লেখযোগ্য।
৫০
হাজার ধারণক্ষমতার এই মাঠটিতে এ
পর্যন্ত ৯টি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে মাত্র
২ বার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ৭
বার। প্রথম ইনিংসে গড় রান ২১৯।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২১২।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৬৯।
সর্বনিম্ন ১৫৭/১০।
এই
মাঠের কালো মাটির উইকেট পেসারদের বেশ সহায়তা দেয়। তবে ইনিংসের মধ্যভাগে স্পিনাররাও সহায়তা পেতে শুরু করেন।
মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম
মহারাষ্ট্র
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম (পুনে):
২০১০
সালে নির্মাণ কাজ শেষ করে ২০১১ বিশ্বকাপের ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল এখানে। কিন্তু ২০১২ সালের আগে এই স্টেডিয়ামটিকে আন্তর্জাতিক
ম্যাচ খেলার জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। এবারের বিশ্বকাপে এখানে পাঁচটি ম্যাচ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের দুটি ম্যাচ আছে। প্রথমে টাইগাররা ভারতের বিপক্ষে ও শেষে অস্ট্রেলিয়ার
বিপক্ষে এই মাঠে লড়বে।
সাড়ে
৩৭ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি ব্যাটিংবান্ধব উইকেটের। প্রচুর রান হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে স্পিনাররাও সুবিধা পেতে শুরু করেন। এ পর্যন্ত মাঠটিতে
মোট ৭টি ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ৪
বার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ৩
বার। প্রথম ইনিংসে এখানে গড় রান ৩০৭।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২৮১।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৩৫৬।
আর সর্বনিম্ন ২৩২/১০।
এম.
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম (বেঙ্গালুরু):
৪০
হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি ১৯৬৯ সালে নির্মিত হয়। এই মাঠে আধুনিক
ক্রিকেটের কিংবদন্তি গর্ডন গ্রিনিজ ও স্যার ভিভ
রিচার্ডস খেলেছিলেন ১৯৭৪ সালে। ছোট বাউন্ডারির স্টেডিয়ামটি ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। বিশেষ করে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। অনেক বড় বড় টার্গেটও
এই মাঠে অনায়াসে ছুঁয়ে ফেলার রেকর্ড আছে।
এই
মাঠেই ২০১৩ সালে রোহিত শর্মা ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। এই মাঠেই ২০১১
বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। কেভিন ও’ব্রায়েন ৫০
বলে করেছিলেন সেঞ্চুরি। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে
দ্রুততম।
৪০ হাজার ধারণক্ষমতার এই মাঠে এ পর্যন্ত ৩৮টি ওয়ানডে হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪ বার। আর পরে ব্যাট করা দল জিতেছে ২০ বার। প্রথম ইনিংসে গড় রান ২৩২। আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২১৫। সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৮৩। আর সর্বনিম্ন ১১৪/১০।
এবারের
বিশ্বকাপের মোট ৫টি ম্যাচ রয়েছে এই মাঠে। অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান, ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা, নিউ জিল্যান্ড-পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ও ভারত-নেদারল্যান্ডস
মুখোমুখি হবে এখানে।
ওয়াংখেড়ে
স্টেডিয়াম (মুম্বাই):
ভারতের
অনেক বড় বড় ক্রিকেটারের
আঁতুড় ঘর এটি। অনেক
বড় বড় তারকা ক্রিকেটারের
পদধূলি পড়েছে এখানে। ১৯৭৪ সালে নির্মিত স্টেডিয়ামটির প্রথমদিককার ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার থাকলেও
দুই দফা পুনঃনির্মাণের পর বর্তমান ধারণক্ষমতা
৩৩ হাজার।
এই মাঠে পেসার ও স্পিনাররা সমান সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে শুরুতে পেসাররা সুবিধা পান। তবে ব্যাট-বলে দারুণ লড়াই হয় এখানে। এই মাঠেই ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ মাত্র ১১৫ রানে অলআউট হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে। রবী শাস্ত্রী এই মাঠে তিলক রাজের ৬ বলে ৬ ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।
এই
স্টেডিয়ামে এ পর্যন্ত মোট
২৯টি ওয়ানডে হয়েছে। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪
বার। আর পরে ব্যাট
করা দল জিতেছে ১৫
বার। প্রথম ইনিংসে গড় রান ২৩৪।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২০১।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৩৮। সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৭৯/১০ (ভারত, অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে)। এবারের বিশ্বকাপে এখানে একটি সেমিফাইনালসহ মোট পাঁচটি ম্যাচ রয়েছে। বাংলাদেশ এবারও এখানে একটি ম্যাচ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
ইডেন
গার্ডেন (কলকাতা):
১৮৬৪
সালে নির্মিত হওয়ায় এটিই ভারতের সবচেয়ে পুরনো স্টেডিয়াম। উপ-মহাদেশের ক্রিকেট
ইতিহাসের মতোই পুরনো কলকাতার ইডেন গার্ডেন। অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই স্টেডিয়াম। ভারতের
সর্ববৃহৎ স্টেডিয়ামটির এক সময় লাখের
ওপর দর্শক ধারণক্ষমতা ছিল। কিন্তু পুনঃনির্মাণের পর সেটি কমে
বর্তমান ধারণক্ষমতা ৬৬ হাজার।
ইডেন
গার্ডেন ব্যাটিংবান্ধব উইকেট হলেও স্পিনারদেরও সুবিধা কম দেয় না।
ম্যাচ যতো গড়াতে থাকে স্পিনারদের বলও ততো ধরতে থাকে। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই মাঠেই রোহিত
শর্মা ওয়ানডেতে তার দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরিটি (২৬৪) হাঁকিয়েছিলেন।
ভারতের স্টেডিয়ামগুলোর মধ্যে এই ভেন্যুতেই সবচেয়ে বেশি টেস্ট ম্যাচ (৩৯টি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ানডে হয়েছে মোট ৩৫টি। তার মধ্যে আগে ব্যাট করা দল জিতেছে ২০টিতে। আর পরে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪টিতে।
ওয়ানডেতে
এখানে প্রথম ইনিংসে গড় রান ২৪১।
আর দ্বিতীয় ইনিংসে গড় রান ২০৩।
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪০৪।
আর সর্বনিম্ন ৬৩/১০ (ইংল্যান্ডের
বিপক্ষে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল)।
এবারের
বিশ্বকাপের একটি সেমিফাইনালসহ মোট পাঁচটি ম্যাচ হবে এখানে। তার মধ্যে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ও বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসদের
ম্যাচ রয়েছে। এছাড়া ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ও পাকিস্তান-ইংল্যান্ডও
খেলবে ভারতের সবচেয়ে পুরনো এই মাঠে।
সুত্র: রাইজিং বিডি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন