এক সময়ে তাকে ঘিরেই স্বপ্ন বোনা হতো। তার ব্যাটে রানের ফুলঝুরি ছুটলেই ছুটত বাংলাদেশের ইনিংস। প্রতিপক্ষের বোলারদের চোখে চোখ রেখে কথা বলা, জবাব দেওয়া, প্রতি আক্রমণ; ২২ গজের ক্যানভাসে সব চিত্র আঁকা হতো তার ব্যাটের রঙ ছড়িয়ে। সেই পাট চুকিয়ে ফেললেও মাঠের ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পারেননি মোহাম্মদ আশরাফুল।
বিশ্বকাপের
মঞ্চে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেখানে পা
মাড়াচ্ছে সেখানেই ছুটছেন আশরাফুল। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক টি স্পোর্টসের অ্যানালিস্ট
হিসেবে যুক্ত হয়েছেন ভারত বিশ্বকাপে। খুব কাছ থেকেই দেখছেন প্রিয় দলের সব প্রস্তুতি। গতকাল
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন মহারাষ্ট্র
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন গ্যালারিতে বসে ছিলেন আশরাফুল। ভারতের বিপক্ষে এই মাঠেই বৃহস্পতিবার
নিজেদের চতুর্থ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
লোকেমুখে
শোনা যায়, ভারত-পাকিস্তানের পর এখন ভারতের
বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াইটা বেশ জমে। প্রতিবেশি দুই দেশের সমর্থকদের মধ্যেও সেই উত্তেজনা পাওয়া যায়। আশরাফুলও সেই ঝাঁজ কিছুটা টের পান। প্রস্তুতি দেখার ফাঁকে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথোপকথনে বলছিলেন,‘সমর্থকদের কারণে বাড়তি উন্মাদনা তো ছড়ায়। তবে
এসব ম্যাচে এমনিতেও আগ্রহ থাকে সবার। ভারতের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত ফ্যানবেজ থাকে। বাংলাদেশেরও তাই্। সাকিব-মুশফিকদের আলাদা সমর্থক। তারা প্রত্যেকে যখন এক হয়ে যায়
তখন মাত্রাটা বেড়ে যায়। তাই ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ এখন ভিন্ন মাত্রা পায়। আর শেষ কয়েক
বছরে বাংলাদেশ ভারতকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীতা দেয়ায়, কিছু ম্যাচ জেতায় লড়াইটা এখন জমে ওঠে।’
২০০৭
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন আশরাফুল। সব মিলিয়ে প্রতিবেশি
দেশের বিপক্ষে জাতীয় দলের জার্সিতে লড়েছেন ১৪ ম্যাচে। জয়ের
সুখস্মৃতিও রয়েছে তার ঝুলিতে। ড্রেসিংরুমে এমন বারুদে ম্যাচের আগে আবহ কেমন থাকে জানতে চাইলে আশরাফুল খুলে দিলেন কথার ঝাঁপি,‘খেলোয়াড়রাও চাপ অনুভব করে। সেটা যত বড় খেলোয়াড়
হোক। টেন্ডুলকারের সঙ্গে আমার অসংখ্যবার কথা হয়েছে। ও বলেছে, নিজেও
চাপ অনুভব করে।’
আশরাফুল
আরও বলেছেন, ‘বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ভেতরে সেই চাপ থাকে। কারো বেশি থাকে, কারো কম। তবে ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ের একটা বিষয় হচ্ছে, ওদের বিপক্ষে ভালো খেললে হাইলাইট হওয়া যায় বেশ। তাই সবার আগ্রহ থাকে ভালো খেলার। স্মরণীয় কিছু করার। এটা খুব ভালো দিক যে ক্ষুধাটা বেড়ে
যায়। তাতে বড় কিছু করার
সুযোগও বেড়ে যায়। ড্রেসিংরুমে টিম মিটিংয়ে কিন্তু বলা হয় নিজেদের স্বাভাবিক
খেলাটা খেলতে। পরিস্থিতি বুঝে খেলতে। সবাই সেটাই করে। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা জেদ, বড় কিছু করার
তাড়না থাকে।’
২২
বছর ৩৫৩ দিনে অধিনায়কত্ব গ্রহণ করে সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হয়েছিলেন আশরাফুল। ভারতের বিপক্ষেও এক ম্যাচে অধিনায়কত্ব
করেছেন। তার বিশ্বাস, বিশ্বমঞ্চে খেলার এই চাপ জয়
করলেই পুনে থেকে বড় কিছু নিয়ে
ফিরতে পারবে বাংলাদেশ, ‘শেষ চার ম্যাচে ওদের বিপক্ষে তিনটা জয় বাংলাদেশের। এটা
অবশ্যই বড় কিছু এবং
ভালো স্মৃতি। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে
খেলতে পারলে অনেক ভালো করবে বাংলাদেশ। কেবল ভুলে যেতে হবে ম্যাচটা ওদের মাটিতে হচ্ছে আর বিশ্বকাপে হচ্ছে।
তাহলেই হবে। অন্য দশটা ম্যাচের মতো করে ভাবলেই সব সম্ভব।’
সুত্র: রাইজিং বিডি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন