সব খানেই ফিট মিরাজ - স্টেডিয়াম

মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

সব খানেই ফিট মিরাজ

কয়েকবার ফিল্ডারের মাথার ওপর আদিল রশিদের বল বাউন্ডারি ছাড়া করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই রশিদকে খেলতে গিয়েই বোল্ড হলেন মুশফিকুর রহিম, আর ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে মিডল অর্ডারেও মিরাজের ব্যাটিংশৈলী ক্রিকেট অনুরাগীদের চোখের শান্তি হলেওমধুর সমস্যাথাকছে টিম ম্যানেজমেন্টের।

 


মিরাজকে যেখানেই খেলানো হচ্ছে, সেখানেই ভালো করছেন। ওয়ানডে সংস্করণে অধিকাংশ ম্যাচে নম্বরে পজিশনে ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। সে পজিশনে তাঁর ফিফটি আছে, রয়েছে সেঞ্চুরিও। গত বছর ডিসেম্বরে মিরপুরে এক মিরাজের কাছেই ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল ভারত। ওপেনিংয়ে যেন মিরাজ আরও দুর্দান্ত ইনিংসে ১৭২ রান, গড় ৫৭.৩৩। আছে একটি সেঞ্চুরিও। ওপেনিং, , নম্বরের ব্যাটিং পরীক্ষায় আগেই পাস করেছেন মিরাজ। বিশ্বকাপের দুই প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁকে দেখা গেল ভিন্ন দুই ভূমিকায়।


প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনে ব্যাটিং করেছিলেন মিরাজ; সীমিত ওভারের ম্যাচে যে পজিশনে কখনো দেখা যায়নি তাঁকে। গতকাল গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরাজ ব্যাটিং করলেন চারে; যে জায়গায় তিন সংস্করণে এর আগে কখনো ব্যাটিং করেননি। দ্রুত উইকেট পড়লে মিরাজকে মিডল অর্ডারেও লাগতে পারে, তার আগে একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

 

লঙ্কানদের বিপক্ষে ৬৪ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। গতকাল বাংলাদেশ যখন দ্রুত উইকেট হারাচ্ছিল, তখন এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন মিরাজই। তাঁর ৭৪ রানের ইনিংসের সৌজন্যে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩৭ ওভারে ১৮৮ রান করেছিল বাংলাদেশ। দুই প্রস্তুতি ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং গড় ১৪১। এই এশিয়া কাপে ওপেনিংয়ে নেমে ৭০ গড়ে করেছিলেন ১৪০ রান।

 

গত দুই বছরে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে মিরাজ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের একজন। ২০২২ থেকে এখন পর্যন্ত .৩২ ইকোনমি রেটে সর্বোচ্চ ৩৬ উইকেটশিকারি মিরাজই। ব্যাটিংয়ে ২৩ ইনিংসে করেছেন ৬২০ রান, গড় ৩৬.৪৭। এই সময়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাজমুল হোসেন শান্ত লিটন দাসের পরই সেরা মিরাজের ব্যাটিং গড়।

 

ব্যাটিংয়ে দারুণ করা মিরাজ ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়েই বোলিংয়ে জাদু দেখিয়েছেন। বিশ্বকাপে সেটি দেখাতে কতটা প্রস্তুতি? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে রানপ্রসবা উইকেটে ১০ ওভারে মাত্র ৩২ রানে নিয়েছেন উইকেট। অভিজ্ঞতা, প্রতিশ্রুতিশীল এবং যেকোনো জায়গায় মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতাসবকিছু বিবেচনায় বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার মতো ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশেরআন সাং হিরোহতে পারেন মিরাজ। গত পরশু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজ থেকে বিশ্বকাপের বিশ্লেষণধর্মী এক ভিডিও বার্তায় মাশরাফি বলেছেন, ‘আমার কাছে মিরাজ হচ্ছে এই দলের আন সাং হিরো। যেখানে তাকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সেখানেই সে রান করছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরিও করেছে।

 

আফগানিস্তানের বিশ্বসেরা স্পিন আক্রমণ সামলে এশিয়া কাপে ১১২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন মিরাজ। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও আফগানদের বিপক্ষে খেলবেন তাঁরা। সেই ম্যাচে লিটনের সঙ্গে তানজিদ তামিম নাকি মিরাজ ওপেনিং করবেন, মধুর এই সমস্যা আছে টিম ম্যানেজমেন্টেরও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দুই ম্যাচেই স্পিনে কাবু তামিম। দুই প্রস্তুতি ম্যাচে ১৪০ রান করে এই বাঁহাতি ব্যাটারও সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখলেন। মাশরাফি তাঁকে নিয়ে বলেছেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে তানজিদও রান করেছে, এখন কী করবে ম্যানেজমেন্ট, জানি না। সম্প্রতি মিরাজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্পিন দারুণ সামলেছে। তাকে দিয়ে ওপেন করানোর চিন্তা, হলেও হতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন