তামিম ইকবালের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। সিনিয়র তামিমকে আদর্শও মানেন তানজিদ। তাই বলে কি দুই তামিমের ক্যারিয়ারের শুরুটায় এত মিল?
বয়সভিত্তিক
ক্রিকেটে পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন তানজিদ তামিম। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে
২০২০ যুব বিশ্বকাপও জিতেছেন এই ক্রিকেটার। কিন্তু
জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে কোথায় যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন তানজিদ। কেউ হয়তো বলতে পারেন—তানজিদের আদর্শ যে তামিম ইকবাল,
যার জন্য তাঁর শুরুটা হয়তো এমন বিপরীতমুখী!
একটু
দেরি হলেও আস্থার প্রতিদান যেন দিতে শুরু করলেন তানজিদ তামিম। পুনেতে আজ ভারতের বিপক্ষে
অসাধারণ এক ফিফটি করেছেন
এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে এটি শুধু স্রেফ একটি ইনিংস বললেও সুন্দর হবে না। এই ইনিংস ভারতের
বিপক্ষে তানজিদ তামিমের—তামিম ইকবাল হয়ে যাওয়ার গল্পও বহন করেছে।
২০০৭
বিশ্বকাপের কিছুদিন আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল সিনিয়র তামিমের। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম চার ম্যাচেই ভালো ইনিংস খেলতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার।
সেই অভিষেক বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে দারুণ এক ফিফটি করেছিলেন
তামিম ইকবাল। ওপেনিংয়ে নেমে ৫৩ বলে খেলেছিলেন
৫১ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। সেই
ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক জয়ও পেয়েছিল বাংলাদেশ দল।
১৬
বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে
অভিষেক হওয়া তানজিদ তামিমের ক্যারিয়ারও যেন সিনিয়র তামিমের পরতে পরতে। বিশ্বকাপের কিছুদিন আগে এশিয়া কাপে প্রথমবার বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ। প্রথম ৭ ওয়ানডে ম্যাচে
নিজেকে মেলে ধরতে একদমই ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ধরন, সেটি খেলতে গিয়ে, বারবারই পরাস্ত হলেন।
নিজের
৯ম ওয়ানডে ম্যাচে (৮ম ইনিংসে) এসে
প্রথম ফিফটি পেয়েছেন তানজিদ তামিম। নিজের আদর্শ তামিম ইকবালের মতোই প্রথম ওয়ানডে ফিফটিটা করলেন অভিষেক বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষেই। তাও আবার সিনিয়র তামিমের মতো কম-বেশি নয়,
বারবার ৫১ রানই করলেন।
পুনেতে
জসপ্রিত বুমরা-মোহাম্মদ সিরাজদের বোলিং আক্রমণের সামনে নতুন বলের সেই নড়বড়ে তামিমকে এবার সাবলীল দৃশ্যে দেখা যায়। যদিও প্রথম ৫ ওভারে বাংলাদেশ
তুলেছিল মাত্র ১০ রান। ৭ম
ওভারে বুমরাকে ফাইন লেগ দিয়ে দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরে
সাহসটাও দেখালেন। এর পর তো
ছোটখাটো ঝড় তুললেন। ঠিক
অভিষেক বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে যেন তামিম ইকবালের প্রতিচ্ছবি।
তানজিদ
তামিম ৪১ বলে তুলে
নিয়েছিলেন ফিফটি। ১৫ তম ওভারে
কুলদীপ যাদবের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফিরেছেন ৫১ রানে। ইনিংসে
ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার
বাউন্ডারি। জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে তামিম ইকবালের ছক্কা মারার সেই স্মৃতিও যেন ফেরালেন তানজিদ। আজ ডাউন দ্য
উইকেটে এসে শার্দুল ঠাকুরকে একটা বাউন্ডারি মারলেন।
তানজিদ
তামিমের সঙ্গে লিটন দাসের ওপেনিং জুটি নিয়েও ছিল দুশ্চিন্তা। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ২০ রান জমা
করার আগেই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যাওয়া যেন অলিখিত এক নিয়ম হয়ে
গিয়েছিল। সেখানে থেকে আজ বিশ্বকাপে ওপেনিং
জুটিতে বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ডই গড়েছেন এই জুটি। ৯৩
রান তুলেছেন দুজনে।
এর
আগে বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৬৯ রান। ১৯৯৯
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেন
এই জুটি গড়েছিলেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে ৬০ রানের আরেকটি
জুটি গড়েছিলেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল।
সুত্র: আজকের পত্রিকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন