চোটে পড়ে প্রায় এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন না জসপ্রীত বুমরা। সাদা বলের ক্রিকেট দিয়েই তাঁর প্রত্যাবর্তন হয়েছে। প্রত্যাবর্তনের পর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে চলেছেন বুমরা। বিশ্বকাপে পাল্লা দিয়ে নিচ্ছেন উইকেট, যার মধ্যে গতকাল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে হয়েছেন ম্যাচ-সেরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারানোর ‘রহস্য’ জানিয়েছেন তিনি।
টস
জিতে গতকাল প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এক প্রান্ত থেকে
বুমরা রান আটকে রাখলেও পাকিস্তান সাবলীলভাবেই এগোতে থাকে। দলীয় ৭৩ রানে দুই
ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক, ইমাম-উল-হকের উইকেট
হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন
বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান,
যেখানে তৃতীয় উইকেটে বাবর-রিজওয়ান ১০৩ বলে ৮২ রানের জুটি
গড়েন। এই জুটি ভাঙার
পরই দিশেহারা হয়ে পড়া পাকিস্তান আর ঘুরে দাঁড়াতে
পারেনি, যেখানে বুমরা ৭ ওভার বোলিং
করে ১৯ রান দিয়ে
নিয়েছেন ২ উইকেট। ১
ওভার মেডেনও দিয়েছেন তিনি, যার মধ্যে ৩৪তম ওভারের শেষ বলে রিজওয়ানকে অসাধারণ এক অফ কাটারে
বোল্ড করেন বুমরা। পাকিস্তানের ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯ রান আসে
রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। এরপর ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শাদাব খানকে বোল্ড করেন বুমরা। ভারতীয় পেসারের বোলিংয়ে অবাক হয়ে গেছেন রিজওয়ান, শাদাব দুজনেই।
এমন
দুর্দান্ত বোলিংয়ের অনুপ্রেরণা বুমরা পেয়েছেন স্পিনারদের থেকে। পাকিস্তানের ইনিংসের প্রথম ৭ ওভারের মধ্যে
নিজের ৪ ওভার করে
ফেলেন তিনি। বুমরাকে রোহিত এরপর বোলিংয়ে আনেন ৩৪তম ওভারে। মাঝের ২৭ ওভারে বোলিং
করেছেন কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ সিরাজ, হার্দিক পান্ডিয়ারা। যেখানে বাবর-রিজওয়ান তৃতীয় উইকেট জুটিতে বড় জুটি গড়লেও
কুলদীপ-জাদেজাদের সেভাবে খেলতে পারছিলেন না। উইকেট ২টি কীভাবে বুমরা পেলেন, তা জিজ্ঞেস করা
হলে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা মিডল ওভারে বোলিং করছিলাম। দেখছিলাম যে জাড্ডুর বল
ঘুরছে। অত না ঘুরলেও
অল্প ঘুরছিল। নিজের স্লোয়ার বলগুলো স্পিনারদের স্লোয়ার বলের সঙ্গে তুলনা করছিলাম। গতকাল ছিল সেই দিন, যা কাজে দিয়েছে।
সাদা বলে ম্যাচে কিছুটা সময় রিভার্স সুইং পাচ্ছিলাম।’
আহমেদাবাদের
নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম যে রানপ্রসবা, তা
বোঝা গেছে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই। ইংল্যান্ডের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্য নিউজিল্যান্ড ৩৬.২ ওভারে
তাড়া করে জিতেছে। গতকাল এই মাঠে বিশ্বকাপের
দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাটিং করলেও ৪২.৫ ওভারে
করে ১৯১ রান, যার মধ্যে ৩৬ রান যোগ
করতে পাকিস্তানিরা হারায় শেষ ৮ উইকেট। বুমরা,
জাদেজা, কুলদীপ, সিরাজ, পান্ডিয়া—প্রত্যেকেই ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। নিজেদের দুর্দান্ত বোলিং সম্পর্কে বুমরা বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব,
আপনি উইকেট বোঝার চেষ্টা করবেন। বুঝতে পারছিলাম যে উইকেট কিছুটা
ধীরগতির। তাই হার্ড লেংথে বোলিং করছিলাম। যতটা সম্ভব কঠিন করে তোলা যায়, সেই চেষ্টা করছিলাম।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন