হিমালয়ের পশ্চিম কোলে আশ্রিত ধর্মশালার রূপ-ঐশ্বর্য বড্ড মনোমুগ্ধকর। যার প্রেমে পড়ে মিরাজ-লিটনরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতির ফাঁকে যে যার মতো ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। বোঝাই যায় ফুরফুরে মেজাজে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচের পর বাংলাদেশের এই ফুরফুরে মেজাজ থাকবে তো!
আফগানিস্তানের
বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আজ বিশ্বকাপ শুরু
করবে বাংলাদেশ। নয়নাভিরাম ধর্মশালার এই মাঠে এর
আগে বাংলাদেশ তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ
খেললেও খেলেনি আফগানিস্তান। তবে এই মাঠে ওয়ানডেতে
দুই দলেরই অভিষেক আজ। ‘শুরুর’ ম্যাচ জিতে কোন দলই না শুরু করতে
চাইবে!
আর
বাংলাদেশ দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ‘লক্ষ্য’ যখন সেমিফাইনাল, তখন তো লক্ষ্যপথে এগোতে
আফগানরাই অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ! গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে টুর্নামেন্টে দলের লক্ষ্য সম্পর্কে বললেন, ‘আমরা সবাই বিশ্বকাপ জিততে চাই। তবে বাস্তব সম্ভাবনায়, আমরা যদি ৪-৫টি ম্যাচ
জিততে পারি, তাহলেও বিশ্বকাপের নক আউট পর্ব
বা সেমিফাইনাল পর্যায়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ থাকবে আমাদের। আর সেটা করার
মতো আমরা যথেষ্টই ভালো দল বলে মনে
করি আমরা। সেমিফাইনাল পর্যায়ে যাওয়াই আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’
আফগানদের
বিপক্ষে বাংলাদেশ কাগজে-কলমে ফেবারিটই। অতীতের ১৫ সাক্ষাতের ৯
বারই জিতেছে বাংলাদেশ। ৬ বার জিতেছে
আফগানরা। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের
অবস্থান ৮। আফগানিস্তানের ৯।
তবে এই ‘এগিয়ে’ থাকার মধ্যেও টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় কাজ করছে সতর্কতা–পচা শামুকে পা কাটা যাবে
না।
বিশ্বকাপের
উইকেট রানপ্রসবা হলেও ধর্মশালায় বিপরীত চিত্র দেখা যেতে পারে। সাত বছর আগে সর্বশেষ যখন এখানে খেলেছিল ভারত, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৯ রানে খুইয়ে
বসেছিল ৭ উইকেট। তবে
আইপিএলের অনেক ম্যাচেই আবার বিভিন্ন দল বড় স্কোর
গড়েছে এখানে। নতুন বলে এখানে সাধারণত সুইং ও সিম মুভমেন্ট
পেয়ে থাকেন পেসাররা।
এই
কন্ডিশনে বাংলাদেশ দলের একাদশ কী হবে—সে
সম্পর্কে সুস্পষ্ট করে তেমন কিছু বলেননি বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান কোচ। শুধু জানিয়েছেন, ম্যাচের দিন সকালে উইকেট দেখে একাদশ ঠিক করবেন। ওপেনিং জুটিতে কারা থাকছেন, সেটিও উইকেট দেখে এবং টসের ওপর নির্ভর করে সাজানো বলে জানিয়েছেন হাথুরুসিংহে। ধর্মশালার উইকেট নিয়ে কোচ হাথুরু বললেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য উইকেট খুবই ভালো। উইকেটে ঘাস আছে। তবে আমার মনে হয় এটা স্পোর্টিং
উইকেট হবে। হাই স্কোরিং ম্যাচের প্রত্যাশা করছি।’
সাকিবদের
জন্য বড় চ্যালেঞ্জ আফগান
বোলারদের সামাল দেওয়া। নতুন বলে ফজলহক ফারুকি যেন ব্যাটারদের যম হয়ে উঠতে
না পারে সে ব্যাপারে সচেতন
থাকতে হবে ব্যাটারদের। তিন স্পিনার মুজিব-উর রহমান, রশিদ
খান ও মোহাম্মদ নবীর
বিরুদ্ধেও দল কতটা ভালো
খেলতে পারছে, তার ওপরই অনেকটা নির্ভর করবে দলের সাফল্য।
আর
আফগানিস্তান দল তাকিয়ে তাদের
আইপিএল খেলা তারকাদের দিকে। বাংলাদেশকে হারাতে তারা প্রস্তুত জানিয়ে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমাতউল্লাহ শহিদি বললেন, ‘আমরা পরস্পরের সঙ্গে অনেকবারই খেলেছি। কখনো তারা জিতেছে, কখনো আমরা জিতেছি। এশিয়া কাপে তারা আমাদের হারিয়েছে। তবে এই ম্যাচের জন্য
আমরা পুরোপুরি তৈরি এবং আমরা অনেক আলোচনা করেছি, নিজেদের প্রস্তুত করেছি এবং ওদের সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে। এই ম্যাচে ঘুরে
দাঁড়াতে সেভাবেই চেষ্টা করব আমরা।’
সুত্র: আজকের পত্রিকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন