আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ, তা-ও আবার এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে। তাই তানজিম হাসান সাকিবের ওপর বেশি চাপ থাকাটাই ছিল স্বাভাবিক। তবে জুনিয়র সাকিবকে দেখে তা বোঝার কোনো উপায় আছে? কলম্বোর প্রেমাদাসায় উল্টো ভারতকেই চাপে রেখেছেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার।
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ইনিংসের প্রথম ওভারেই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন জুনিয়র সাকিবকে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে তুলে নিয়েছেন রোহিত শর্মার উইকেট। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি তুলে মারতে গিয়ে রোহিত কাভারে এনামুল হক বিজয়ের তালুবন্দী হয়েছেন। দুই ওভার পর বোলিংয়ে এসে আবারও উইকেট তুলে নিলেন সাকিব। তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অসাধারণ এক ইনসুইঙ্গারে বোল্ড করেন তিলক ভার্মাকে। বলটা বেরিয়ে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন ভারতের অভিষিক্ত টপ অর্ডার ব্যাটার। ১৭ রানে ২ উইকেট হারানো ভারতকে চাপ থেকে উদ্ধারের দায়িত্ব পড়ে শুভমান গিল ও লোকেশ রাহুলের কাঁধে। রাহুল ও গিলকেও বেশ চাপের মধ্যে রাখেন জুনিয়র সাকিব।
জুনিয়র সাকিব ‘চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা’ দিয়েছেন শেষ ওভারে। ভারতের জয়ের জন্য দরকার ১২ রান, হাতে ১ উইকেট। উইকেটে তখন মোহাম্মদ শামি। প্রথম বলে দারুণ এক বাউন্সারে শামিকে ভড়কে দেন তানজিম সাকিব। পরের দুটো বলে অসাধারণ স্লোয়ারে ভারতের টেইলএন্ডার ব্যাটারকে পরাস্ত করলেন তিনি। এরপর চতুর্থ বলে জুনিয়র সাকিব খেয়ে গেলেন চার। ২ বলে ৮ রান কঠিন সমীকরণ হলেও আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা থাকা শামির কাছে তা একেবারে অসম্ভব কিছু নয়। সেই সময় তানজিম সাকিবের ইয়র্কার বল থেকে দুই রান নিতে গিয়ে রানআউট হন শামি। বাংলাদেশও পায় ৬ রানের রুদ্ধশ্বাস এক জয়। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জুনিয়র সাকিব বলেন, ‘লাইন ও লেংথে মনোযোগ দিয়েই আমি সফল হয়েছি। ২ বলে ৮ রান দরকার। এটা খুবই কঠিন পরিস্থিতি ছিল। তাই আমি ইয়র্কার করেছি।’ আর রোহিতের উইকেটকে স্বপ্নের উইকেট বলছেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার, ‘রোহিত ভাইয়ের উইকেটটা স্বপ্নের উইকেট।’
অভিষেক
ম্যাচে সাকিব জুনিয়র বোলিং করেছেন ৭.৫ ওভার।
৩২ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। এক
ওভার মেডেনও দিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার। তাঁর বোলিংয়ে মুগ্ধ বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ক্রিকেট
ধারাভাষ্যকার আতহার আলি খান। ম্যাচ চলাকালেই তাঁর টুইট, ‘তানজিম হাসান সাকিবের এ দৃশ্য দেখতে
ভালো লাগে আমার—শক্তিতে ভরপুর ২০ বছর বয়সীর
মুগ্ধতা ছড়ানো পেস, বাউন্স, লাইন/লেন্থ দারুণ মুগ্ধতা জাগানিয়া। তাঁর বল ভেতরে ঢোকানো
(ইনসুইং) ও বের করে
নেওয়ার (আউটসুইং) স্কিলও আছে। দারুণ সম্ভাবনাময়ী এবং পেস আক্রমণে নতুন এক মাত্রা যোগ
করেছে।’
সুত্র: আজকের পত্রিকা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন