এশিয়া কাপে বৃষ্টির কারণে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে রাখা হয়েছিল রিজার্ভ ডে। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত দিনেই এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচটির নিষ্পত্তি হয়েছে। পাকিস্তানকে ২২৮ রানে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের নজির গড়েছে ভারত। রানের হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি ভারতের সবচেয়ে বড় জয়।
সোমবার দ্বিতীয় দিন ব্যাট করে ২ উইকেটে ৩৫৬ রানের সংগ্রহ পায় ভারতীয় দল। সেই রানের চাপেই পাকিস্তান পিষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টি ব্যাঘাত ঘটিয়েছে ছন্দে। ইনিংসে বৃষ্টি হানা দেওয়ার আগে ৪৩ রানেই ওপেনার ইমাম উল হক (৯) ও বাবর আজমের (৯) উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান। তার পর প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (২) ও ফখর জামান (২৭)। মাঝে আগা সালমান (২৩) ও ইফতিখার (২৩) লড়াই করার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না তাদের ইনিংস। তার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৩২ ওভারে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয়েছে ১২৮ রানে। শেষ দুই ব্যাটার নাসিম শাহ ও হারিস রউফ ব্যাট করতে নামেননি।
রিস্ট স্পিনার কুলদীপ ২৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে ধসিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছেন। ইনজুরি বিরতির পর ওয়ানডেতে প্রথমবার বল করতে নামা জসপ্রীত বুমরা একটি উইকেট নিয়েছেন। সম সংখ্যক উইকেট নিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া ও শার্দুল ঠাকুর।
২৪.১ ওভারের খেলা হয়েছিল গত দিন। ২ উইকেট হারানো ভারত স্কোরবোর্ডে জমা করেছিল ১৪৭ রান। রিজার্ভ ডেতে ম্যাচ গড়ালেও ভারত সেই দুই উইকেট হারিয়েই রানের পাহাড় গড়েছে। টস হেরে ব্যাট করেও ২ উইকেটে তুলেছে ৩৫৬ রান। পাকিস্তানের বিপক্ষে যা ভারতের যৌথ সর্বোচ্চ। ২০০৫ সালেও ভারত ৯ উইকেটে ৩৫৬ রান তুলেছিল। ধোনি সর্বোচ্চ ১৪৮ রান তুলেছিলেন।
এই ম্যাচে ৪৭তম সেঞ্চুরিতে মাইফলক ছুঁয়েছেন কোহলি। ১৩ হাজার রান পূরণ করেছেন। এই মাইলফলকে তিনি সবার চেয়ে দ্রুততম। ভেঙেছেন শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড। ১৩ হাজার রান পূরণ করতে শচীনের লেগেছিল ৩২১ ইনিংস। কোহলির লেগেছে ২৬৭। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় কোহলির অবস্থান পঞ্চম।
দীর্ঘদিন পর ওয়ানডেতে প্রত্যাবর্তন করা লোকেশ রাহুলও বার্তা দিলেন বিশ্বকাপের আগে। তিনি যে প্রস্তুত সেটার জানান দিয়েছেন এই ম্যাচে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে। ১০৬ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। সঙ্গী কোহলি ছিলেন আরও বেশি বিধ্বংসী। ৯৪ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ১২২ রানে। তিনি ৮৪ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছেন। তাতে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
এদিন শুরুতেই হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। তাতে বিলম্বে শুরু হয় ম্যাচ। ওভার কাটা যায়নি অবশ্য। প্রথমে বৃষ্টির আধিপত্য থাকলেও ধীরে ধীরে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। এদিন ২৫.৫ ওভারের খেলা হয়েছে। তাতে দুই ব্যাটার রান তুলেছেন ২০৯! তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২৩৩ রান যোগ করেছেন তারা। যা পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের রেকর্ড জুটি। আগের সর্বোচ্চটি ছিল ২৩১। ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয় উইকেটে এটি করেছিলেন নভজোৎ সিং সিধু ও শচীন টেন্ডুলকার।
পাকিস্তানের এক পেসার কমে যাওয়া যে প্রভাব ফেলেছে সেটি স্পষ্ট। হারিস রউফ ইনজুরির কারণে এদিন বল তো দূরের কথা, মাঠেই নামতে পারেননি। তাতে তিন পেস বোলিং অপশনে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
সবচেয়ে ব্যয় বহুল ছিলেন শাহীন আফ্রিদি। ৭৯ রান দিয়ে একটি উইকেট পেয়েছেন। সমসংখ্যক উইকেট নেওয়া শাদাব দিয়েছেন ৭১ রান।
সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন