কারও কারও চোখে পাকিস্তান ফেবারিট, আবারও কারও চোখে ফেবারিট নয়। তবে দলটির এই তথ্য নিয়ে কারও মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই যে তারা বড্ড ‘আনপ্রেডিকটেবল’। আনপ্রেডিকটেবল দলের হয়েও ‘প্রেডিকটেবল’ ধারাবাহিক ব্যাটিং করে চলেছেন অধিনায়ক বাবর আজম। ইমাম-উল-হকের ব্যাটিংয়েও বড় ধারাবাহিকতা। লম্বা একটা সময় ধরেই সেরা দশে ইমাম এবং র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষভাগে অবস্থান বাবরের। তাঁদের এই ধারাবাহিকতায় এ বছরই প্রথমবারের মতো ওয়ানডের এক নম্বর দল হিসেবে আবির্ভূত হয় পাকিস্তান। এক নম্বর হয়েই গত এশিয়া কাপে অংশ নিয়েছিল তারা। কিন্তু ‘যেই লাউ, সেই কদু!’ অন্যতম সেরা ফেবারিট হয়েও সুপার ফোরে খর্বশক্তির শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে সেমির আগেই অপ্রত্যাশিত বিদায় বাবর আজমদের।
সেই এশিয়া কাপ এখন অতীত। বাবরদের কাছে বিশ্বকাপই এখন বর্তমান। হট ফেবারিটের তকমাটা হয়তো গায়ে নেই, কিন্তু দলটির যে শক্তিশালী ব্যাটিং ও ভীতি জাগানিয়া বোলিং লাইনআপ, তাতে টুর্নামেন্টের সেরা বাছাইয়ে তাদের রাখতেই হয়। এবার ভারতের রানপ্রসবা উইকেটে বোলাররাই ম্যাচ জেতাবেন বলে অভিমত বেশির ভাগ ক্রিকেট পণ্ডিতের। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে হিসাবের মধ্যে রাখার আবেদন জানান শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, হাসান আলীর সমন্বয়ে গড়া দলের পেস আক্রমণ।
সকালকে
যদি দিনের পূর্বাভাস ধরা হয়, তাহলে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের শুরুটাই বলবে বিশ্বকাপটা কেমন যাবে তাদের। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আজ পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ
নেদারল্যান্ডস। অবশ্য ডাচদের মতো পুঁচকে একটা দলের বিপক্ষে পারফরম্যান্স দিয়ে দলটির বিশ্বকাপ সম্ভাবনার মূল্যায়নটা যুক্তিযুক্ত হবে না। নেদারল্যান্ডসকে এখনো শৌখিন ক্রিকেটারদের দল বললে বাড়িয়ে
বলা হবে না। বিশ্বকাপের আগে ম্যাচ প্র্যাকটিসের ঘাটতি ছিল বলে সবার আগে ভারতে গিয়েছে তারা। বেঙ্গালুরুতে করেছে প্রস্তুতি ক্যাম্প। ভারতের বিপক্ষে তাদের শেষ অফিশিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচটাও ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বৃষ্টি।
তবে
ওয়ানডেতে নিজেদের মেলে ধরার ক্ষেত্রে এটা কোনো বাধা হতে পারে না। আর ডাচরাও এমন
অপেশাদার নয়। তবে মনে রাখা ভালো, বাছাইয়ে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের
মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে তারা। নতুন আর অভিজ্ঞতার মিশেল
তাদের দলে। ওপেনিংয়ে বিক্রমজিৎ সিং ও ম্যাক্স ও’ডাউডের দুর্দান্ত শুরু যেকোনো দলের জন্যই মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। মাথাব্যথার কারণ হতে পারে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের ব্যাটিংও। বাছাইয়ের আট ম্যাচে ৬২.৮০ গড়ে ৩১৪
রান তাঁর, স্ট্রাইকরেট ১১২.১৪। অলরাউন্ডার বাস ডি লিড আর
লোগান ফন বিকের থাকাটাও
ভারসাম্যপূর্ণ করে তুলেছে ডাচ দলকে।
তারপরও
এই দলের বিপক্ষে অবশ্য প্রমাণের কিছু নেই পাকিস্তানের। তবে দেখানোর আছে বাবর আজমদের। গত বিশ্বকাপে পাকিস্তান
ব্যর্থ হলেও আপন মহিমায় উদ্ভাসিত ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ৬৭.৭১ গড়ে
করেছিলেন ৪৭৪ রান। সেটি ছিল তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ। এবার দ্বিতীয় বিশ্বকাপে শুধু নিজের রান পাওয়াটাই লক্ষ্য নয় বাবরের, দলের
পারফরম্যান্সেও ধারাবাহিকতা নিয়ে আসার লক্ষ্য তাঁর। শুরুতেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ পেয়ে বড় লক্ষ্য নিয়ে
পাকিস্তান এগোতে চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন